بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
পরম করুণাময় ও অতি দয়ালু আল্লাহ তায়ালার নামে শুরু করছি।
الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক।
الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
যিনি পরম করুণাময় অতি দয়ালূ।
مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ
যিনি (বিচার) প্রতিফল দিবসের মালিক।
إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ
আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদাত করি এবং শুধু তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।
اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ
তুমি আমাদেরকে সরল সঠিক পথ প্রদর্শন কর
صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ
তাদের পথ, যাদের প্রতি তুমি অনুগ্রহ (রহমত) করেছ।
غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ
তাদের পথে নয় যারা অভিশপ্ত (ইয়াহুদি) ও পথভ্রষ্ট (খ্রিষ্টান) হয়েছে।
আমিন, আমিন, আমিন।
পবিত্র কুরআনের সবচেয়ে মর্যাদাবান সূরাটা হলো সূরাতুল ফাতিহা। সূরা ফাতিহা হলো উম্মুল কুরআন তথা কুরআনের মা। প্রতিদিনের ফরয সালাতে আমরা সতেরো বার সূরা ফাতিহা তিলাওয়াত করি। এই সূরার শুরুটা হয়েছে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালার প্রশংসাবাক্য দিয়ে। আমরা ঘোষণা দিই- আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলা’মীন। সমস্ত প্রশংসা তার জন্যে যিনি বিশ্ব জাহানের মালিক। এরপর আমরা বলি- আর রাহমানির রাহীম। মালিক্বী ইয়াওমিদদ্বীন। ‘আর রাহমানির রাহীম’ মানে হলো যিনি পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু’। আর, ‘মালিক্বী ইয়াওমিদদ্বীন’ মানে হলো ‘যিনি বিচার দিনের মালিক’।
এখানে আল্লাহর দুটো গুণের কথা পরপর উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমে বলা হয়েছে আল্লাহ হচ্ছেন পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু। এরপর বলা হলো তিনি হলেন বিচার দিনের মালিক। আচ্ছা, কখনো কি মনে এই ভাবনার উদয় হয়েছে যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালা কেনো তার ‘আর রাহমানির রাহীম’ গুণটাকে ‘মালিক্বী ইয়াওমিদদ্বীন’ গুণের আগে স্থান দিয়েছেন? তিনি তো চাইলে বলতে পারতেন- মালিক্বী ইয়াওমিদদ্বীন। আর রাহমানির রাহীম। কিন্তু তিনি সেভাবে বলেননি। কেনো বলেননি?
বিচারক তিনিই যিনি আপনার ভালো-মন্দ দুটো কাজেরই হিশেব চাইবেন। বিচার করার জন্য তার দুটোরই পরিপূর্ণ হিশেব দরকার। আর, সেই বিচারক যদি হয় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালা, তখন ব্যাপারটা কেমন হবে? তার চোখকে ফাঁকি দিয়ে কি কোন পাপ লুকোনো যাবে? তার কাছ থেকে গোপন করা যাবে কোন গুনাহ, কোন অবাধ্যতা? জীবনের পরতে পরতে আমরা যে অহরহ পাপ করছি, তার অবাধ্য হচ্ছি- সেসবের কোন হিশেবই কি আল্লাহর কাছ থেকে লুকোনোর সুযোগ আছে? নেই। বিচারের মাঠে তিনি যদি কঠোর হওয়া শুরু করেন, তাহলে সম্ভবত আমাদের কেউই তার ক্রোধ থেকে বাঁচতে পারবো না।
কিন্তু, তিনি যে ‘বিচারক’, সেই গুণের কথা উল্লেখ করার আগে তিনি বলেছেন তিনি হলেন ‘পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু’। তার রয়েছে অসীম দয়ার ভান্ডার। তিনি বিচারকের আগে দয়ালু। এর অর্থ হলো- আমরা যারা প্রতিনিয়ত নিজেদের নফসের ধোঁকায় হাঁবুডুবু খাচ্ছি, যারা দিনের পর দিন তার অবাধ্য হচ্ছি, গুনাহের অথৈ সাগরে মজে রয়েছি- আমরা যদি আন্তরিকতার সাথে তার দিকে ফিরে আসি, যদি অনুতপ্ত হৃদয়ে তার কাছে ক্ষমা চাই, তাহলে তিনি আমাদের ক্ষমা করে দেবেন। বিচারকের ভূমিকার আগে যে তিনি দয়ালু হবার ভূমিকার কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি আপনার বিচার করার আগে আপনাকে দয়া করবেন যদি আপনি বলেন- হে রাহমানুর রাহীম! প্রতিনিয়ত গুনাহের অতল গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছি। হেন কোন পাপ নেই যা আমি করছিনা। রাতের অন্ধকারে, দিনের আলোতে আমি একজন পাপী। আমার শরীরের প্রতিটি শিরা-উপশিরা আজ পাপের কালিমায় দূষিত। আমার হৃদয়-মন আজ গুনাহের ভারে জর্জরিত। তবুও, মালিক আপনি তো রাহমানুর রাহীম। গাফুরুর রাহীম। আমি আজ নত মস্তকে, বিনীত চিত্তে, আকুল হৃদয়ে আপনার ক্ষমা প্রার্থণা করছি, আপনি আমায় ক্ষমা করে দিন’।
তিনি আমাদের জন্য সুযোগ বরাদ্দ রেখেছেন। ফিরে আসার সুযোগ। ক্ষমা লাভের সুযোগ। ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার সুযোগ। তাই তিনি সূরা ফাতিহাতে ‘মালিক্বী ইয়াওমিদদ্বীন’ গুণের আগে ‘আর রাহমানির রাহীম’ গুণের কথা উল্লেখ করেছেন। এখন আমাদের উচিত সেই সুযোগ লুফে নেওয়া। তাকে বিচারক হিশেবে পাওয়ার আগে রাহমানুর রাহীম হিশেবে পেয়ে যাওয়া।
লেখকঃ আরিফ আজাদ [ অপ্রকাশিত পান্ডুলিপি থেকে…]
MD. BILLAL HOSSAIN says
ইয়া আল্লাহ আপনি আমাদেরকে বিচার দিবসের দিন আপনার গুনের সিফাতের উসিলা আপনি আমাদেরকে রহম করবেন আমি আপনার একজন নগণ্য বান্দা ইয়া আল্লাহ আপনি আমার এ কথা কে কবুল করে নিন আমিন